ইরান পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করে ১৯৫৭ সালে। আর এই প্রযুক্তি অর্জন করতে ইরানকে সাহায্য করে অ্যামেরিকা। ওই সময় ইরানের শাহ রেজা পাহলভি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র। ফ্রান্স ও জার্মানিও ইরানকে এই কাজে সহায়তা করে। কিন্তু ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের মাধ্যমে শাহ উৎখাত হন। ফলে রাতারাতি অ্যামেরিকা ও পশ্চিমাদের শত্রুতে পরিণত হয় ইরান। ইরানের সাথে অ্যামেরিকার প্রায় সব ধরনের চুক্তি বাতিল হয়ে যায়।
তবে ইরান থেমে থাকেনি। ১৯৮০-এর দশকে ইরান নিজের চেষ্টায় পারমাণবিক প্রযুক্তি অর্জনের গবেষণা শুরু করে। কিন্তু এই চেষ্টাকে ইসরায়েল কখনোই ভালো চোখে দেখেনি। ১৯৯০-এর দশকের শুরু থেকেই ইরানের বিরুদ্ধে প্রচারণা শুরু করে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের দাবি ছিল- ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে এবং ইরান শুধুমাত্র ইসরায়েল নয়, বরং সারা দুনিয়াই ধ্বংস করতে চায়। ইসরায়েলের এই দাবি যে ভিত্তিহীন এটা পশ্চিমা দেশগুলো জানত। কারণ ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে ইরান একদম প্রকাশ্যে ইউরোপীয় কোনো সহযোগী খুঁজছিল। ইরান চেয়েছিল ইউরোপীয়রা তাদের বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি কর্মসূচি উন্নয়নে সহায়তা করুক। কিন্তু, অ্যামেরিকার চাপে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলো সে সময় ইরানকে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করে।
আসলে ইরানকে নিয়ে ইসরায়েলের ভয় ছিল। ভূ-রাজনৈতিক কারণে ইরানকে হুমকি মনে করে ইসরায়েল।
আর ইরানের কাছে এমন ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি রয়েছে যা ২,৫০০ কিমি দূরে গিয়ে আঘাত করতে সক্ষম। ইরান এখন শুধু ব্যালিস্টিক নয়, ক্রুজ মিসাইল (Soumar) এবং কমব্যাট ড্রোন (Shahed-136) প্রযুক্তিতেও শক্তিশালী। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের ড্রোন ব্যবহার করেছে।
কিন্তু ইরানের সাথে ইসরায়েলের এত পুরনো শত্রুতা কেন?
আসলে মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতি খুবই জটিল। এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতি বুঝতে হলে জানতে হবে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট। আপনি যদি সহজ ভাষায় মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি এবং ইসরায়েলের সাথে ইরানের সম্পর্ক বুঝতে চান তাহলে পড়তে পারেন চমৎকার দুইটি বই। ১. ‘প্রিজনার্স অব জিওগ্রাফি’, ২. ‘ইসরায়েল ও সভ্যতার সংঘাত’।
ইসরায়েল এবং মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নি ব্লকের কাছে ইরান কেন একটি বড় হুমকি তা জানতে হলে এই বই দুইটি হাইলি রিকমেন্ডেড।
